OrdinaryITPostAd

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা ও অপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা  
প্রিয় পাঠক ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা এ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। যেমন , অল্প বয়সে চোখে মুখে বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, স্কিনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন হওয়া, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা

এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করবেন। তবে আমরা আমাদের চারপাশে প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া সবুজ শাক-সবজি, মাছ, দুধ, ডিম ইত্যাদি থেকে ভিটামিন ই পূরণ করতে পারি, এবং এই রোগ গুলো হতে মুক্তি পেতে পারি।

ভূমিকাৃ

ভিটামিন ই কে দুই ভাবে বলা যায় যেমন ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং অ্যান্টি এজিং ভিটামিন। ভিটামিন ই, কে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কেন বলি। আমাদের শরীরে তিনটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাজ করে। যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এবং ভিটামিন ই। যা আমাদের শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলস গুলোকে নষ্ট করে। আর এন্টি এজিং ভিটামিন গুলো আমাদের শরীরে ত্বককে ভালো রাখে, বয়স্ক ভাব দূর করে, চোখে মুখে কালো দাগ দূর করে ইত্যাদি।
  • ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা
  • আমাদের শরীরে প্রতিদিন কি পরিমাণ ভিটামিন ই প্রয়োজন
  • ভিটামিন ই পাওয়া যায় কোন খাবারে
  • ভিটামিন ই এর অভাব হলে কি কি রোগ হতে পারে
  • ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
  • চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা 

শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর মাধ্যমে তা পূরণ করতে পারি। ভিটামিন ই ক্যাপসুলের  উপকারিতা ও অপকারিতা   নিয়ে আজকে জানবো ।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা রয়েছে অনেক সেই বিষয়ে আজকে জানবো।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: আমাদের শরীরে যখন মেটাবলিজম হয় তখন ফ্রি রেডিকেলস তৈরি হয়। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। সেল গুলোকে ড্যামেজ করে, হার্টের ক্ষতি করতে পারে, চেহারার বয়সের ছাপ পড়ে, ক্যান্সারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ই আমাদেরএই ফ্রি রেডিকেলস গুলো দূর করার ফলে এ রোগ গুলো থেকে রক্ষা করে।

ইমিউনিটি শক্তিতে সাহায্য করে: ইমিউনিটি বলতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বোঝায়। আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ জীবাণু প্রবেশ করে, আর ভিটামিন ই এ রোগ জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে এবং তাদের ধ্বংস করে । এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের জন্য উপকারী: ত্বককে সুন্দর করার জন্য শুধু স্কিনে ভিটামিন ই ব্যবহার করলেই হবে না । আমাদের শরীরের ভেতরের অংশকে সুস্থ রাখতে হবে। তাই ভিটামিন ই এর অভাব হলে ত্বকের সমস্যা হয় । শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে ভিটামিন ই ঘাড়তি পূরণ করতে হবে তাহলে শরীর ভালো থাকবে। পাশাপাশি ত্বককে লাবণ্যময় করতে সহায়তা করবে।

হার্ট ভালো রাখে: আমাদের যে হার্ড থাকে, হৃদ যন্ত্রের সাথে জড়িত যে সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থাকে সেগুলো সুস্থ রাখতে ভিটামিন ই এর গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে: আমাদের চোখকে ভালো রাখতে ভিটামিন ই এর ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের বয়সের সাথে সাথে গ্লোকমা, ক্যাটারাক্টর যা আমাদের চোখে ছানি পড়ে যায়। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে ভিটামিন ই প্রয়োজন। আপনার শরীরটা যদি ভিটামিন ই এর অভাব না থাকে তাহলে অল্প বয়সে চোখের সামনে আসার সম্ভাবনা কম থাকে ।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে বৃদ্ধি করে: ভিটামিন এ এর অভাবে স্মৃতিশক্তির লোপ পাই। এই রোগটি বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। বয়স বেশি হবার পর বুদ্ধিশক্তি লোপ পায়, বিচার বুদ্ধি কমে যায়, কোন কিছু সহজে মনে করতে পারে না, কোন কাজ দ্রুত করতে পারে না ইত্যাদি। নিয়মিত ভিটামিন এ খেলে এ রোগ গুলো আরো কিছুদিন পরে বা দেরি করে আসবে।

ক্ষত সারাতে সাহায্য করে: আমাদের শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ই থাকে তাহলে শরীরের কোন অংশ যদি ক্ষত হয় তা দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।

মাংসপেশিকে মজবুত করে: আমাদের শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ই থাকে তাহলে আমাদের মাংসপেশিকে মজবুত করে। ভিটামিন ই থাকার কারণে মাংসপেশিকে ক্লান্ত হতে দেয় না। তাই আমাদের শরীরে যেন ভিটামিন ই এর ঘাটতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই: ভিটামিন ই এর অভাবে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া চুলের আগা দুইটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। ভিটামিন ই খেলে এই সমস্যা হলো দূর হয়ে যায়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াটাই ভালো।

বয়স্ক ভাব দূর করে : ভিটামিন ই এর অভাব থাকলে অল্প বয়সে চোখে বয়সের ছাপ পড়ে যায়। পরিমাণ মতো ভিটামিন খেলে বয়স্ক ভাব দূর হয়ে যায়।

অপকারিতা

যার উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতা আছে। নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা নিয়মিত ই ক্যাপসুল সেবন করেন, তাদের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাওয়ার ফলে সমস্যা দেখা দিলে সেই মুহূর্ত থেকে ই ক্যাপসুল খাওয়া বন্ধ করাই ভালো। পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যে সমস্যাগুলো দেখা যায়।

  • বমি হতে পারে
  • ব্লিডিং হতে পারে
  • মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে
  • শারীরিক ক্লান্ত অনুভব আসতে পারে
  • এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারে শরণাপন্ন হতে হবে।

ভিটামিন ই পাওয়া যায় কোন খাবারে

উদ্ভিদ থেকে ভিটামিন ই পাওয়া যায় যেসব খাবারে এবং প্রাণী থেকে ভিটামিন ই পাওয়া যায় যেসব খাবারে তা নিচে আলোচনা করা হলো।                                                                   


উদ্ভিদ উৎস

ভিটামিন ই

অলিভ অয়েল

কুসুম ফুলের তেল

কেনলা তেল 

সয়াবিন তেল

বাদামের তেল

গমের তেল

কাজুবাদাম

ভুট্টা কই

বাদাম মাখন

বিভিন্ন ফলের রস

জলপাই তেল

  সূর্যমুখী তেল

চিনা বাদাম

  কিউই ফল

পাম তেল

অ্যাভোকাডো

পেস্তা বাদাম

পাকা আম

সবুজ শাকসবজি

কুমড়োর বীজ

লাল মিষ্টি মরিচ

আক্রোড

  পালং শাক ,বাঁধাকপি

অঙ্কুরিত গম

ব্রোকলি

টমেটো

মটরশুটি


লেবু


  টিম


দুধ


চিনা বাদাম


পাইনবাদাম


মিষ্টি আলু



ক্রঃনং

প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া ভিটামিন ই

মাছ

সামুদ্রিক মাছ

মুরগির মাংস

গরুর মাংস

দুধ, ডিম

সালমান ফিস

রাজহাঁসের মাংস

মাখন



আমাদের শরীরে প্রতিদিন কি পরিমাণ ভিটামিন ই প্রয়োজন

আমাদের শরীরে প্রতিদিন 15 মিলিগ্রাম ভিটামিন ই প্রয়োজন হয়। ভিটামিন ই একটি লিপিড সলিবুল, আমরা যদি ই ক্যাপসুল খেয়ে থাকি তাহলে আমরা খাবারের পরে এই ক্যাপসুলটি খাব তাহলে উপকারটা বেশি হবে।

ভিটামিন ই এর অভাব হলে কি কি রোগ হতে পারে

ভিটামিন ই এর অভাব হলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু রোগ বাসা বাঁধে। জেনে নেই কি কি রোগে আমাদের আক্রমণ করতে পারে।
  • মাংসপেশীতে ক্লান্তি দেখা দেয়
  • হাত পায়ে শক্তি কম পাওয়া যায়
  • অল্প বয়সে দৃষ্টি শক্তি কমে যায়
  • স্কিনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন হয়
  • মাংসপেশিতে দুর্বলতা দেখা যায়
  • চোখে ঝাপসা দেখা যায়
  • ভিটামিন ই এর অভাব হলে শরীরের ক্ষতগুলো শুকাতে দেরি হয়
  • শরীরে হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা যায়
  • চুল পাতলা হয়ে যায়
  • ভারসাম্যহীনতা অনুভব করে
  • রক্তশূন্যতা দেখা যায়

ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল

বর্তমানে ত্বক ও চুলের যত্নে সকলেই সচেতন। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও ত্বক ও চুলের যত্নে খুব সচেতন। ত্বক যেমন সৌন্দর্যের প্রতিক তেমনি চুল ও সৌন্দর্যের প্রতিক। আসুন জেনে নেই ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অবদান।

  • দারচিনি গোড়া সামান্য পরিমাণে, ৪-৫ml লেবু, মধু ১ চা চামচ, এবং ৪০০ml অথবা ২০০ml ১টি ই ক্যাপসুল এর লিকুইড অংশটুকু ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখে সপ্তাহে 1-2 বার রাতে ব্যবহার করবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ত্বকের চামড়া গুলো ঝুলে যাওয়া বা স্পট দাগ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বককে সুস্থ রাখবেন।
  • দই , এ্যালোভেরা ,কলা এবং ১ টি ই ক্যাপসুলের লিকুইডের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার ত্বকে ব্যবহার করবেন। তাহলে ত্বক উজ্জ্বল হবে এবং ত্বকে ফ্যাকাশে ভাব দূর হবে। পরিমাণ মতো পানি পান করলে ত্বক ভালো থাকে।
  • ই ক্যাপসুল এর লিকুইড এর সাথে ২-৩ চা চামচ অলিভ অয়েল এর সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে সমস্ত শরীরে নিয়মিত মাসাজ করুন তাহলে আপনার শরীর সফ্ট হবে। আধাঘন্টা পর গোসল করে ফেলবেন।
  • ১টি ই ক্যাপসুল লিকুইড এর সাথে সামান্য পরিমাণ ভেসলিন অথবা বোরোলিন এর সাথে মিশিয়ে নিয়ে ঘুমানোর আগে পায়ের গোড়ালির ফাটা স্থানে ভালোভাবে লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ফাটা গোড়ালি সফট হয়ে যাবে।
  • ১টি এই ক্যাপসুলের লিকুইড এর সাথে আলমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিয়ে নিয়মিত চোখের নিচে কালো স্থানে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তাহলে আস্তে আস্তে কালো দাগগুলো চলে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন চোখের মধ্যে না যায়।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল

জেনে নেই চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকার।

  • অনেকের চুলের আগা দুইটা মুখ বের হয় ,এই সমস্যা কিভাবে দূর করবেন জেনে নেই। ২ চা চামচ তিলের তেল , কাস্টার্ড ওয়েল , এবং ১ টি ই ক্যাপসুল এর লিকুইড এর সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে আপনার মাথায় ব্যবহার করতে পারেন । রাতে মাখলে সকালে মাথা ভালো ভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ ব্যবহার করতে পারেন।

শেষ কথা 

ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনাদের শরীরের জন্য এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন ই আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বককে উজ্জ্বল রাখে, দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে ইত্যাদি। আমাদের শরীরের জন্য ২০০-৪০০ mg ক্যাপসুলটি প্রযোজ্য। যদি আমাদের শরীরে ভিটামিন ই ঘাটতি না থাকে তাহলে এই ক্যাপসুলটি না খাওয়াটাই ভালো। কারণ ভিটামিন ই ক্যাপসুল পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে তার শরীরে জমে থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া উচিত। প্রিয় পাঠকএই আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হন তাহলে সবার মাঝে শেয়ার করে দিবেন যেন সবাই উপকৃত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url