ভারত-বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। ভারতের দৃশ্য, সুন্দর্য পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। একই সময়ে শীত, গ্রীষ্ম ,বর্ষা। দক্ষিণ ভারতে যখন গরম উত্তর ভারতে তখন বরফ পড়ে। কিছু নিয়ম কানুন যেমন,ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি অবলম্বন করে ভারতীয় ভিসা নিয়ে ভারত- বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোর সাথে করে খুব সহজেই ভারতে যাওয়া সম্ভব।
এই জন্য পর্যটকদের কাছে ভারতের বিভিন্ন স্থান পর্যটক কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। এমনি এভাবে বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ভারত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।এবং শিক্ষা ,চিকিৎসা ,বাণিজ্য কিংবা ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতে যেয়ে থাকে।
ভূমিকা
বর্তমানে ইন্ডিয়া যেমন সৌন্দর্যের দিক দিয়ে এগিয়ে তেমনি চিকিৎসা শাস্ত্রে তারা অগ্রগতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য খুব সহজে ইন্ডিয়া যেতে পারে এবং বাংলাদেশের অনেক মানুষ ইন্ডিয়ার পর্যটক কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করতে যে থাকে।
- ভারত- বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
- ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি
- ডলার অনুমোদন প্রক্রিয়া 2023
- বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়ম কানুন
- পেশা সংক্রান্ত কাগজপত্র
ভারত- বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
ভারতে যেতে হলে ভারত বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন আসুন জেনে নিই এক নজরে। বাংলাদেশ হতে ভারতে যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনার প্রয়োজন হবে।
১। দেশীয় পাসপোর্ট।
২। ভারতীয় ভিসা।
৩। চিকিৎসার জন্য গেলে ডাক্তার সার্টিফিকেট।
৪। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী হলে সে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ছুটি প্রত্যয়ন পত্র।
৫। সরকারি চাকরিজীবী হলে মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি প্রত্যয়ন পত্র।
৬। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী হলে অবসর প্রাপ্ত কার্ড।
৭। স্টুডেন্ট হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড।
৮। যেকোনো ব্যাংক হতে ১০০০ টাকা মূল্যের ট্রাভেল ট্যাক্স রিসিভ।
ভারত বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে এই সকল কাগজপত্র গুলো সঙ্গে থাকতে হবে। তাহলে আপনি কোন প্রকার দালালের নিকট প্রতারণার শিকার হবেন না।
ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি
বাংলাদেশ হইতে ভারতে যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনার পাসপোর্ট এর সাথে ভারতীয় ভিসা সংযুক্ত করতে হবে। পর্যটক কেন্দ্র অথবা চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া যেতে হলে ভিসা বাধ্যতামূলক। আসুন জেনে নেয়া যাক ভারতীয় ভিসা আবেদন পদ্ধতি গুলো।
টুরিস্ট ভিসা বা চিকিৎসা ভিসা বা যেকোন ভিসার জন্য প্রযোজ্য।
১। পাসপোর্ট এর ফটোকপি (প্রথম দুই পেজ)।
২। ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি (যেটা দিয়ে পাসপোর্ট করেছেন)।
৩। বিদ্যুৎ বিল অথবা ওয়াসার বিল অথবা টেলিফোন বিল এর ফটোকপি।
৪। আপনি যেখানে কর্মরত আছেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ছুটির প্রত্যয়ন পত্র, শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড, যিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি তার ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত কাগজপত্র থাকতে হবে, ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে, কৃষক হলে খতিয়ানের ফটোকপি জমা দিতে হবে, সরকারি চাকরিজীবী হলে মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র দিতে হবে, গৃহিণী হলে বাড়তি কিছু লাগবে না।
৫। পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি ছবির পেছনে সাদা কালার হতে হবে।
৬। আপনি যেদিন ভিসা আবেদন করবেন আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ সেই দিন হতে কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে।
৭। নতুন পাসপোর্ট এর সাথে পুরানো পাসপোর্ট ও জমা দিতে হবে যদি থাকে।
৮। আপনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার প্রমাণ হিসেবে পাসপোর্ট এর সর্বনিম্ন ১৫০ ডলার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রার অনুমোদন থাকতে হবে।
৯। সর্বশেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর অনুলিপি দিতে হবে একাউন্টে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ব্যালেন্স থাকলে ভালো হয়।
১০। অনলাইন এপ্লিকেশন ফর্মে নির্ধারিত স্থানে আবেদনকারীকে তাদের ছবি স্ক্যান করে আপলোড করে আবেদনকারীকে অবশ্যই নিশ্চিত থাকতে হবে যেন বর্তমান পাসপোর্ট এর জন্ম তারিখ এবং জন্মস্থান জাতীয় পরিচয় পত্রের অথবা জন্ম নিবন্ধনে তথ্যের সাথে মিল থাকে।
১১। আবেদনকারীকে অবশ্যই আবেদনপত্রটি পূরণ করার পর ৮ দিনের মধ্যে ভিসা অফিসে জমা দিতে হবে্
১২। প্রথম ভ্রমণের ক্ষেত্রে উপস্থিত ডাক্তারের কাছ থেকে সুপারিশপত্র থাকতে হবে।
ডলার অনুমোদন প্রক্রিয়া 2023
বর্তমানে বাংলাদেশ হতে ভারতগামী বাংলাদেশী নাগরিকের পাসপোর্টে ডলার ইনডোর্সমেন্ট, মানে ডলার অনুমোদন আছে কিনা সেটা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনে পার হওয়ার জন্য ডলার ইনডোর্সমেন্ট জরুরী ।সুতরাং আপনি ডলার ইনডোর্সমেন্ট ব্যাংক থেকে করাতে পারেন অথবা যে কোন মানে এক্সচেঞ্জ অফিস থেকেও করাতে পারেন। এখানে কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
আপনি যদি সড়কপথে অথবা আকাশ পথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ৫০০টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে হতো, কিন্তু বর্তমানে ৫০০ টাকা পরিবর্তে ১০০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে হবে। বর্তমানে ট্রাভেল ট্যাক্স ১০০০/= টাকা জমা দিতে হবে।
আপনি চাইলে বন্দর ছাড়াও ঢাকা শহর বা বাংলাদেশের যে কোন শহর থেকে ব্যাংক চালানোর মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন আপনি যদি স্থল বন্দরে জমা দেন তাহলে অতিরিক্ত ৪৫ থেকে ৫০টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়ম কানুন
কোভিড ১৯ কিংবা করোনা সময়ে বাংলাদেশ হতে ভারতের মধ্যে যাতায়াত প্রক্রিয়াটা কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল, বর্তমানে ভারত বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু চালু হয়েছে স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি এবং ইমিগ্রেশনে কিছু পুরনো নিয়মের সাথে নতুন কিছু নিয়ম চালু করা হয়েছে। আসুন জেনে নেই নতুন নিয়ম।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় আপনি যখন বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করবেন তখন আপনার সাথে কোভিড ১৯ আইডি কার্ড বা সনদপত্র অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে।
কয়েক টি ফটোকপি করে নিবেন। কমপক্ষে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সনদপত্র থাকলেও হবে যে কোন কোম্পানির ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলেই চলবে। যদি আপনার ভ্যাকসিন দেওয়া না থাকে তাহলে আপনাকে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার ৭২ ঘন্টা আগে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সার্টিফিকেট সাথে নিতে হবে।
পেশা সংক্রান্ত কাগজপত্র
আপনারা যখন বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাবেন তখন অবশ্যই পেশা সংক্রান্ত কাগজপত্র সাথে থাকতে হবে । যেমন আপনি যদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটির প্রত্যয়ন পত্র বা NOC অবশ্যই সাথে নিতে হবে । তবে সেই প্রতিষ্ঠানের প্যাডে প্রতিষ্ঠানের মালিকের অথবা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর সিল সহ থাকতে হবে ।
আপনি যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তাহলে সে প্রতিষ্ঠানের মন্ত্রণালয়ের নিকট হতে ছুটির জন্য প্রত্যয়ন পত্র নিতে হবে।
আপনি যদি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হইতে আইডি কার্ড নিতে হবে। আপনি যদি কৃষক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জমির খতিয়ানের ফটোকপি সাথে নিতে হবে। আপনি যদি অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে অবসরপ্রাপ্ত কাগজপত্র সাথে নিতে হবে। আপনি যদি ব্যবসা হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স সাথে নিতে হবে।
মন্তব্য; আপনারা যদি উপরের নিয়ম-কানুন গুলো বৈধ ভাবে করতে পারেন তাহলে ভারতে যাওয়া খুব সহজ। যাদের পাসপোর্ট নেই তারা নিজ দেশে পাসপোর্ট করে ভারতীয় ভিসা লাগিয়ে ভারতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url